বিচারবিভাগীয় মেরুকরণ
মহারাষ্ট্রে বিজেপির সরকারি মুখপাত্র হিসেবে কাজ করা অ্যাডভোকেট আরতি সাতেকে বোম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ করার পর, তীব্র সমালোচনায় ফেটে পড়েছেন মহারাষ্ট্রের বিরোধী নেতারা। নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের ২৮ জুলাই অনুষ্ঠিত সুপ্রিম কোর্টের এক বৈঠকে সাতের নিয়োগের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। এই নিয়োগের পর বিরোধী নেতারা দাবি করেছেন, বিচারব্যবস্থার নিরপেক্ষতা ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে আরতি সাতেকে অবিলম্বে অপসারণ করা হোক। এনসিপি (এসপি)-এর সাধারণ সম্পাদক ও বিধায়ক রোহিত পাওয়ার বলেছেন, “সরকারি মঞ্চে শাসক দলের হয়ে সরাসরি সওয়াল করা একজন ব্যক্তিকে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া — এটাই গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় আঘাত।” কেন্দ্রে ও বিজেপি রাজ্যগুলিতে আরএসএস পন্থী বিচারক নিয়োগের সংখ্যা ক্রমশ বাড়লেও সরাসরি একজন বিজেপির মুখপাত্রকে মুম্বই হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে মহারাষ্ট্রে। প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ৯ই নভেম্বর বাবরি মসজিদ মামলায় সুপ্রিমকোর্টের রায় দেওয়া তৎকালীন প্রধানবিচারপতির রঞ্জন গগৈ-এর ওই মাসেরই ১৭ তারিখ অর্থাৎ রায় ঘোষণার ঠিক ৮ দিন পর অবসর নিয়ে ২০২০ র ১৬ই মার্চ বিজেপির বিজেপির মনোনীত রাজ্যসভার সাংসদ পদ গ্রহণ, নিরপেক্ষ বিচারব্যবস্থার সামনে প্রশ্নচিহ্ন হয়ে দাড়িয়েছিল। গত ৩১শে জুলাই মালেগাঁও বিস্ফোরণ মামলায় প্রজ্ঞা সিং ঠাকুরকে ক্লিনচিট দিয়ে বিশেষ এনআইএ আদালতের বিচারপতি এস.ডি. টেকালে তীব্র সমালোচনার মধ্যে পড়েন। এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি শেখর কুমার যাদব ২০২৪ এর ৮ ই ডিসেম্বর বিশ্ব হিন্দু পরিষদের এক মঞ্চ থেকে মুসলিমদের ‘কাটমুল্লা’ সম্বোধন করলে দেশ জুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। বিচারবিভাগীয় ন্যায়ব্যবস্থা সংখ্যালঘুদের সঙ্গে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছে এমন ধারণা মানুষের মনে তীব্রতর হচ্ছে বলে রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা। এখন একজন বিজেপি মুখপাত্রকে মহারাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি নিযুক্ত করাটা রাষ্ট্রীয় নিরপেক্ষতার প্রশ্নচিহ্নের সামনে এনে দাঁড় করিয়েছে।
দ্য স্ক্রল
8/7/20251 min read
Quiet moments
